রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চার সপ্তাহ পর সরকারের ঘোষণা এলো কট্টরপন্থি সংগঠন তালেবানের পক্ষ থেকে। তবে পূর্ণাঙ্গ সরকার গঠন না করে গঠন করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
তালেবান নেতা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে এ সরকারের প্রধান করা হয়েছে। এতদিন সরকারপ্রধান হিসেবে যার নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায় ছিল, সেই আব্দুল গনি বারাদারকে করা হয়েছে সরকারের উপপ্রধান।তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ মঙ্গলবার রাতে নতুন সরকারের ঘোষণা করেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
মুখপাত্র মুজাহিদ বলেন, তালেবানের উপনেতা সিরাজুদ্দিন হাক্কানিকে ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সংগঠনের রাজনৈতিক প্রধান শের মোহাম্মদ আব্বাস স্ট্যানেকজাইকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। আর তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা ইয়াকুবকে করা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
তালেবান নেতা হেদায়াতুল্লাহ বদরিকে করা হয়েছে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী। মুজাহিদ বলেন, ‘আফগানিস্তান সরকারের প্রয়োজনীয় কর্মকাণ্ড পালনে অন্তর্বর্তী মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়া হয়।
‘নতুন ইসলামিক সরকারে এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।’গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেন, আফগানিস্তানে দুই দশকের যুদ্ধের ইতি টেনে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সেনা ফেরত নেবেন। মে থেকে উজ্জীবিত তালেবান আফগানিস্তানের একের পর এক প্রদেশ দখল নিতে শুরু করে।
সবশেষ গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলে নিয়ে সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে কট্টর ইসলামপন্থি দলটি। তবে সরকার গঠনে সময় নিচ্ছিল তালেবান। সেই অপেক্ষার অবসান হলো।
কাবুল ও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের পরই সম্ভাব্য সরকার নিয়ে তালেবান বলেছিল, তারা ২০ বছর আগের অবস্থানে নেই। এবার অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠন করা হবে, যেখানে থাকবে সবার অংশগ্রহণ। রাখা হবে নারী প্রতিনিধি।
সময়ের সঙ্গে সুর পাল্টায় তালেবান। জানায়, এককভাবেই সরকার গঠন করবে তারা। রাখা হবে না কোনো নারী নেতৃত্বও। অন্তবর্তী সরকারেও তাই দেখা গেল।
তালেবান সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধে দেশের ভগ্নদশা অর্থনীতি চাঙ্গা করা, দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সম্পর্ক স্থাপন করা।