আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই তালেবানের পক্ষ থেকে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মোল্লা আবদুল গনি বরাদারের নাম শোনা যাচ্ছে।
অবশ্য এ ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি সংগঠনটি। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানাচ্ছে, মোল্লা আবদুল গনিই তালেবান সরকারের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন।
জানা যায়, তালেবান আন্দোলন প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম হচ্ছেন মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। গোষ্ঠীটির সাবেক নেতা মোল্লা ওমরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তিনি। দক্ষিণ আফগানিস্তানে অধিকাংশ তালেবান সামরিক কর্মকাণ্ডের অধিনায়ক গনি।
২০১০ সালে পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর একটি বিশেষ দল করাচিতে থেকে গনিকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রই গনিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করেছিলো।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এর পরপরই তাকে সংগঠনটির রাজনৈতিক বিষয়ক নেতা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো। এছাড়া কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের কূটনৈতিক দপ্তরের প্রধান হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারে ওয়াশিংটনের সঙ্গে তালেবানের যে চুক্তি হয় তাতে স্বাক্ষর করেছিলেন গনি।
রোববার সকালে রাজধানী কাবুলের চার দিক দিয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে তালেবান যোদ্ধারা। তবে দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে কাবুলে ঢোকার মুখেই থমকে যেতে হয় তাদের। তালেবান নেতারা জানান, যারা কাবুল ত্যাগ করতে চায়, সে সুযোগ যেন তাদের দেওয়া হয়। কোনো সংঘাত নয়, বরং শান্তিপূর্ণভাবেই তারা ক্ষমতার পালাবদল চায় তারা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন কূটনীতিবিদ ও ন্যাটো প্রতিনিধিদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন আশরাফ গনি। এরপর বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় তালেবান নেতৃত্বকে।
আমন্ত্রণ পেয়ে মোল্লা আবদুল গনি বরাদরের নেতৃত্বে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের উদ্দেশে রওনা দেয় তালেবানের একটি প্রতিনিধি দল। সেখানে তাদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেন আশরাফ। ওই বৈঠকেই তালেবান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবদুল গনি বরাদরের নাম উঠে আসে।