সামনে কোরবানির ঈদ। তাই খামারিরা ব্যস্ত তাদের দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করা পশুদের নিয়ে। মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সোনারং গ্রামের শরিফ ঢালীর দাবি, তার ব্ল্যাক ডায়মন্ড দেশসেরা। পাঁচ বছরে তার ওজন দাঁড়িয়েছে ৪০ মণ। উন্নত জাতের বিশাল এই ষাঁড়টিকে ঘিরে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই।
‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’! জন্মের পর কালো বর্ণের ষাঁড়টির শরীরের আকার আর ওজন দেখে বিস্মিত হয়ে এ নাম রাখেন মালিক শরিফ ঢালী। নিজ বাড়িতে জন্ম নেওয়া ষাঁড়টিকে পরম মমতায় সাড়ে ৫টি বছর ধরে লালন-পালন করছেন। ষাঁড়টি নিয়েই তার সব ব্যস্ততা এখন ।
মমতার কারণে ষাঁড়টিকে দুই বেলা গোসল করানো। নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দেওয়া। মশার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য মশারি টাঙিয়ে রাখা। আর গরমে শীতল রাখতে ফ্যানের ব্যবস্থাও করেন। যত্নের কোনো ঘাটতি নেই ব্ল্যাক ডায়মন্ডের। আর তার খাবারের মেনু যেন হাতির খোরাক। প্রতিদিন প্রায় দেড় মণ খাবার খায় ষাঁড়টি। আলু কলা, কাঁঠাল, কাঁচা ঘাসসহ অনেক কিছু ।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার না দিলেই হাঁকডাক শুরু হয়ে যায় তার। ষাঁড়ের থাকার ঘরটিও বেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। নয়তো বিরক্তবোধ করে। ব্ল্যাক ডায়মন্ডকে ঘর থেকে বের করা বা ঘরে নিয়ে আসার আগে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হয় মালিককে। কোথাও রওনা হওয়ার আগে আশপাশের কিছু ভাঙচুর করা তার যেন অভ্যাস।
তাকে বের করতে হলে কমপক্ষে ৫ জন দক্ষ এবং সাহসী লোকের দরকার হয়। হাতে রাখতে হয় লাঠি। কোনোভাবে ছুটে গেলে ষাঁড়টির শক্তি মহড়ায় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাই সব সময় সতর্ক থাকতে হয় পরিবারের সদস্যদের। সারাক্ষণ জন্য রয়েছেন একজন রাখাল।
সিমেন ব্যবহারে শরীফ ঢালীর খামারের গাভি থেকে জন্মের পরই ষাঁড়টির ওজন ছিল প্রায় ৮০ কেজি। ষাঁড়টির মালিক শরিফ ঢালী বলেন, সামনের কোরবানির জন্য সারাদেশে যতগুলো ষাঁড় গরু তৈরি হয়েছে তাদের মধ্যে আমারটা এক নম্বরে। মোটা-তাজা নয়, পুরোপুরি প্রাকৃতিক খাবারে খামারির বাড়িতে নিজস্ব পরিচর্যায় এবং প্রাণিসম্পদ বিভাগ তত্ত্বাবধানে এটি পালন করা হয।
জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলা উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আব্দুল খালেক মাল বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশে লালন-পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি। ষাঁড়টির জন্য আমাদের প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করেছি।
ষাঁড়টি নিয়ে মানুষেরও কত দাম উঠছে, কোন হাটে নেওয়া হবে, নাকি অনলাইনে বিক্রি হবে এই এলাকার মানুষের এ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। আর দূর-দূরান্ত থেকেও আসছেন ব্ল্যাক ডায়মন্ডকে দেখতে। ব্রহমা জাতের ষাড়টির উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। আর ওজন প্রায় ১৬০০ কেজি বা ৪০ মণ।