ঢাকামঙ্গলবার , ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. করপোরেট সংবাদ
  6. কৃষি
  7. খেলাধুলা
  8. গণমাধ্যম
  9. চাকরীর খবর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. ধর্ম-দর্শন
  13. নগর জীবন
  14. নারী
  15. নির্মল ভাবনা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মসজিদের দেয়ালে অনিলের আঁকা কোরআনের আয়াত

অনলাইন ডেস্ক
জুন ২৯, ২০২১ ১১:৪৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অনিল কুমার চৌহান। থাকেন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাজধানী হায়দরাবাদে।

৫০ বছর বয়সী অনিল পেশায় স্বশিক্ষিত ক্যালিগ্রাফি শিল্পী। ৩০ বছরের পেশাগত জীবনে ভারতজুড়ে ২০০-এর বেশি মসজিদের দেয়ালে এঁকেছেন কোরআনের আয়াত।

জীবিকার জন্য কিশোর বয়সে হায়দরাবাদ শহরে ঘুরে ঘুরে উর্দু ভাষায় দোকানের সাইনবোর্ড লিখতেন। সে সময়ই ক্যালিগ্রাফির প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার।

অনিল আল-জাজিরাকে বলেন, ‘খুব দরিদ্র পরিবারের ছেলে আমি। ক্লাস টেনে থাকতেই পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হয়। সে সময় পড়াশোনার পাটও চুকেবুকে যায়।

‘ড্রয়িংয়ে ভালো ছিলাম। ভাবলাম সাইনবোর্ডে লেখাকে পেশা হিসেবে নিলে সমস্যা হবে না।’

অনিল জানান, কোরআনের আয়াতের পাশাপাশি হিন্দু দেব-দেবীর ছবিও ৩০টির মতো মন্দিরে এঁকেছেন তিনি। অসংখ্য দরগাহ ও আশ্রমের দেয়ালে তার আঁকা ছবি শোভা পাচ্ছে।

বর্তমানে মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা উপার্জন করা অনিল বলেন, ‘১০০-এর বেশি মসজিদের দেয়ালে কোরআনের আয়াত আঁকার পর আমাকে কিছু সম্মানী দেয়া হয়। পরের ১০০টি মসজিদে আঁকাআঁকির বিনিময়ে কিছু নিইনি।

‘দেয়ালে আঁকতে আঁকতেই মসজিদের সঙ্গে নিজের একধরনের আধ্যাত্মিক সংযোগ টের পাই, যা আমাকে পারিশ্রমিক চাইতে দিত না।’উর্দু ভাষা শিখতে প্রাতিষ্ঠানিক বা ইসলামিক কোনো স্কুলে ভর্তি হননি বলে জানান অনিল।

তিনি বলেন, ‘সাইনবোর্ড লিখতে লিখতে উর্দু পড়া ও লেখা রপ্ত করি। লোকজন শিগগিরই আমার মেধার স্বীকৃতি দিতে শুরু করে এবং তারা আমাকে হায়দরাবাদের অনিন্দ্যসুন্দর মসজিদের ভবন কোরআনের আয়াতে ভরিয়ে দেয়ার সুযোগ দেয়।’

এই ক্যালিগ্রাফি শিল্পী জানান, ৩০ বছর আগে হায়দরাবাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ও দোকানদার মুসলমান ছিল। দোকানের সাইনবোর্ড উর্দু ভাষাতেই লেখা হতো। ওই ভাষা জানা তাই দরকার ছিল।

অর্থ না বুঝেই উর্দু ভাষায় সাইনবোর্ড লিখতে লিখতে একসময় ভাষাটির লিপির প্রেমে পড়ে যান অনিল।

তিনি বলেন, ‘ধীরে ধীরে উর্দু শব্দ ও বর্ণমালা চিনতে শুরু করি। অবসর সময়ে উর্দু বই থেকে বর্ণ বা শব্দ নিজের খাতায় নকল করতাম। এতে উর্দু লেখায় আমার নৈপুণ্য আরও বাড়ে।’

নব্বইয়ের দশকে একদিন হায়দরাবাদের বিখ্যাত নূর মসজিদ কোরআনের আয়াতে অলংকৃত করার ডাক পান অনিল।

তিনি বলেন, ‘এই আমন্ত্রণ পেয়ে জানলাম, হায়দরাবাদের সাধারণ মানুষই কেবল আমাদের প্রতিভার কদর করেছে তা-ই নয়, এখানকার অভিজাত শ্রেণির দরজাও আমার জন্য খুলে গেছে।’

তবে কাজ করতে গিয়ে অনিল বাধার সম্মুখীন হননি তা নয়। হিন্দুধর্মাবলম্বী হওয়ায় স্থানীয় কয়েকজন তার কাজের বিরোধিতাও করেন। তবে কাজের প্রতি অকৃত্রিম দরদ দমাতে পারেনি অনিলকে।

অনিলের কাজে আগে থেকেই সন্তুষ্ট ছিল হায়দরাবাদের জামিয়া নিজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। অনিলের ধর্ম নিয়ে সমালোচনা উঠলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে তার কাজ চালিয়ে যেতে আশ্বস্ত করে।

জামিয়া নিজামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্যালারির শোভা এককালে বাড়িয়েছিল অনিলের অসাধারণ শিল্পকর্ম সুরা ইয়াসিন। ছয় ফুট উঁচু ও চার ফুট চওড়া ক্যানভাসে আঁকা ওই কাজ অনিলকে আরও প্রসিদ্ধ করে তোলে।

একসময় যারা অনিলের কাজের বিরোধিতা করেছিলেন, তারাই আজ তাকে ‘আধ্যাত্মিক আত্মা’ হিসেবে সম্বোধন করেন। তার সামনে শ্রদ্ধায় মাথা নত করেন।

অনিল বলেন, ‘আমি মনে করি, শিল্পের কোনো ধর্ম নেই। ঈশ্বর, আল্লাহ, দেবতা- সবাই এক। আমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান।

‘আজ আমার বেশির ভাগ বন্ধুই মুসলমান। আমরা একসঙ্গে খাই, মাহফিলে অংশ নিই এবং একে অপরের জীবন সমৃদ্ধ করি।’

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।